১ তারপর ইয়োব উত্তর দিল এবং বলল, ২ উহু, যদি শুধু আমার যন্ত্রণা মাপা যেত; যদি শুধু আমার সমস্ত দুঃখ দাঁড়িপাল্লায় ওজন করা যেত! ৩ কারণ এখন এটা সমুদ্রের বালির থেকেও ভারী হবে। এই জন্যই আমার কথা এত বেপরোয়া। ৪ কারণ সর্বশক্তিমানের তীর আমার মধ্যে, আমার আত্মা বিষ পান করেছে; ঈশ্বরের আতঙ্ক আমার বিরুদ্ধে দলবদ্ধ হয়েছে। ৫ বন্য গাধা কি হতাশ হয়ে চিত্কার করে যখন তার ঘাস থাকে? অথবা বলদ কি খিদেয় হতাশ হয় যখন সেটার খাবার থাকে? ৬ যার স্বাদ নেই সেটা কি নুন ছাড়া খাওয়া যায়? অথবা ডিমের সাদা অংশে কি কোন স্বাদ আছে? ৭ আমি তাদের স্পর্শ করতে অস্বীকার করি; তারা আমার কাছে জঘন্য খাবারের মত। ৮ আহা, যদি আমি কেবল আমার প্রার্থনার উত্তর পেতে পারি; আহা, ঈশ্বর যেন আমায় সেই জিনিস দেন যা আমি চাই: ৯ আমি যদি চূর্ণ হতাম তবে এটা হয়ত ঈশ্বরকে খুশি করত, তিনি তাঁর হাত বাড়াবেন এবং এই জীবন থেকে কেটে ফেলবেন! ১০ তবুও এটা আমার সান্ত্বনা হোক, এমনকি আমি যন্ত্রণাতেও আনন্দ করি, যে আমি সেই পবিত্র ব্যক্তির কথা অস্বীকার করি নি। ১১ আমার শক্তি কি, যে আমি অপেক্ষা করতে পারি? আমার শেষ কি, যে আমি ধৈর্য্য ধরতে পারি? ১২ আমার শক্তি কি পাথরের শক্তি? অথবা আমার মাংস কি পিতল দিয়ে তৈরী? ১৩ এটা কি সত্যি নয় যে আমার নিজের জন্য আমার কোন সাহায্য নেই এবং সেই জ্ঞান কি আমার থেকে দূর হয়ে গেছে? ১৪ সেই লোকের প্রতি যে প্রায় অজ্ঞান হতে চলেছে, তার বন্ধুর বিশ্বস্ততা দেখানো উচিত; এমনকি তার প্রতিও যে সর্বশক্তিমানের ভয় ত্যাগ করেছে। ১৫ কিন্তু আমার ভায়েরা আমার প্রতি মরুভূমির প্রবাহের মত বিশ্বস্ত, যেমন বয়ে যায় জলের প্রবাহের মত। ১৬ যা বরফের জন্য অন্ধকারাছন্ন হয় এবং যার মধ্যে তুষার বিলীন হয়ে যায়। ১৭ যখন তারা গলে যায়, তারা অদৃশ্য হয়; যখন তা উতপ্ত হয়, তারা তাদের জায়গায় গলে যায়। ১৮ মরুযাত্রীর লোকেরা যারা সেই রাস্তা দিয়ে যায় এবং জলের জন্য সেই রাস্তা থেকে সরে যায়; তারা মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ায় এবং পরে ধ্বংস হয়। ১৯ টেমার মরুযাত্রীর লোকেরা দেখল, যখন শিবার লোকেরা তাদের উপর আশা করেছিল। ২০ তারা হতাশ হয়েছিল কারণ তারা জল খোঁজার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল; তারা সেখানে গেল, কিন্তু তারা প্রতারিত হল। ২১ কারণ এখন তোমরা বন্ধুরা আমার কাছে কিছুই নও; তোমরা আমার ভয়ঙ্কর অবস্থা দেখেছ এবং ভয় পেয়েছ। ২২ আমি কি বলেছিলাম, ‘আমাকে কিছু দাও?’ অথবা ‘তোমাদের সম্পত্তি থেকে আমাকে উপহার দাও?’ ২৩ অথবা, ‘বিপক্ষের হাত থেকে আমাকে রক্ষা কর?’ অথবা, ‘আমার অত্যাচারীর হাত থেকে আমায় রক্ষা কর?’ ২৪ আমাকে শিক্ষা দাও এবং আমি আমার শান্তি ধরে রাখব; আমাকে বুঝিয়ে দাও কোথায় আমি ভুল করে এসেছি। ২৫ সত্যি কথা কতটা যন্ত্রণা দেয়! কিন্তু তোমাদের তর্কবিতর্ক, প্রকৃতপক্ষে সেগুলো কীভাবে আমাকে দোষী করে? ২৬ তোমরা কি আমার কথা অগ্রাহ্য করার পরিকল্পনা করছ, একজন আশাহীন লোকের কথার আচরণ বাতাসের মত? ২৭ সত্যি, তোমরা এক অনাথের জন্য গুলিবাঁট করেছ, ব্যবসায়ীদের মত তোমাদের বন্ধুর ওপর দর কষাকষি করেছ। ২৮ এখন, এইজন্য, দয়া করে আমার দিকে দেখ, নিশ্চিতভাবে আমি তোমাদের মুখের ওপর মিথ্যা বলব না। ২৯ ক্ষমা, আমি প্রার্থনা করি; তোমার সঙ্গে কোন অন্যায় না হোক; সত্যিই ক্ষমা, কারণ আমার অভিযোগ ন্যায্য। ৩০ আমার জিভে কি কোন মন্দতা আছে? আমার মুখ কি খারাপ জিনিস সনাক্ত করতে পারে না?