17
হৃদয়ে লেখা দোষ
1 “যিহূদার লোকদের পাপ এক জায়গায় লেখা আছে
যেখানে সেইগুলো মোছা যায় না|
লোহার কলম দিয়ে এবং ডগায় হীরে* হীরে আক্ষরিক অর্থে, “নীলকান্ত মনি|” দেওয়া কলম দিয়ে
ঐ পাপগুলো পাথরের ওপর লেখা হয়েছে|
এবং ঐ সব পাথরগুলি হল তাদের হৃদয়|
ঐ সব পাপ লেখা হয়েছে তাদের উৎসর্গের বেদীর শৃঙ্গে|
2 তাদের সন্তানরা মনে রাখে সেই উৎসর্গের বেদীর কথা
যা মূর্ত্তিসমূহকে উৎসর্গ করা হয়েছিল|
তারা মনে রাখে সেই কাঠের খুঁটিগুলিকে
যেগুলো উৎসর্গ করা হয়েছিল আশেরাকে|
তারা সেই সব জিনিষ মনে রাখে
পাহাড় চূড়ায় এবং গাছের নীচে|
3 তারা মনে করবে উন্মুক্ত প্রান্তরে
পর্বতের ওপরে কি হয়েছিল|
যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি|
আমি এই সব অন্য লোকদের বিলিয়ে দেব|
সেই লোকরা তোমাদের দেশে মূর্ত্তিসমূহের
সমস্ত উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করে দেবে|
তোমরা সেই সমস্ত জায়গায় পূজা করেছো|
এবং সেটা একটা পাপ|
4 আমি তোমাদের যে দেশ দিয়েছিলাম তা তোমরা হারাবে|
তোমাদের শত্রুদের আমি তোমাদের দেশ নিয়ে নিতে দেব এবং তোমাদের তাদের দাস হতে দেব এমন এক দেশে যেটা তোমরা জানো না|
কারণ আমি ভীষণ রুদ্ধ|
আমার রোধ হল গনগনে আগুনের মতো এবং তোমরা সেই আগুনের লেলিহান শিখায় চির দিনের জন্য পুড়ে ছাই হয়ে যাবে|”
লোকেদের বিশ্বাস এবং ঈশ্বরকে বিশ্বাস
5 প্রভু এগুলি বললেন,
“যারা অন্যদের বিশ্বাস করে,
তাদের জীবনে অমঙ্গল ঘটবে|
অন্যদের শক্তির ওপর যারা ভরসা করে থাকে
তাদের ক্ষেত্রেও অমঙ্গল ঘটবে|
কারণ ঐ লোকরা প্রভুর প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছে|
6 ঐ সমস্ত লোকরা হল জনমানবহীন মরুভূমির কাঁটা ঝোপের মতো|
তপ্ত, শুষ্ক এবং অনুর্বর মাটিতেও তারা জন্মায়|
সেই সব ঝোপঝাড় জানে না
ঈশ্বর কত ভাল জিনিস দিতে পারেন|
7 কিন্তু যে ব্যক্তি প্রভুতে বিশ্বাস রাখবে, সে প্রভুর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে না|
কারণ প্রভু তাকে দেখাবেন যে তাঁকে বিশ্বাস করা যায়|
8 এই ব্যক্তি জলের ধারে রোপণ করা গাছের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে|
যে গাছের লম্বা শিকড় জলের সন্ধান পাবে, গ্রীষ্মের সময় সেই গাছ ভীত হবে না|
সেই গাছের পাতা সর্বদা সবুজ থাকবে| খরার বছরেও সে নিশ্চিন্ত থাকবে|
ফলদান থেকে সে কখনও বিরত থাকবে না|
9 “মানুষের মন খুবই কৌশলপূর্ণ|
তার অসুস্থ অবস্থার কোন চিকিৎসা নেই|
10 কিন্তু আমিই প্রভু
এবং আমি মানুষের হৃদয়ও পরিষ্কার দেখতে পাই|
আমি একজন মানুষের মনকে পরীক্ষা করতে পারি|
আমি নির্ধারণ করতে পারি কার কি থাকা উচিৎ|
আমি একজন মানুষের কর্মের ফল নির্ধারণ করতে পারি|
11 কখনো কখনো একটা পাখী
অন্যের ডিমে তা দিয়ে তাকে ফোটায|
ঠিক একই ভাবে একজন মানুষ ঠকায়
এবং অন্যের টাকা আত্মসাত্ করে|
সেই টাকা সে তার অর্ধেক জীবনে উড়িয়ে দেয়|
জীবনের শেষ পর্যাযে সে বুঝতে পারে যে সে কত বড় নির্বোধ|”
12 একদম প্রথম থেকেই আমাদের উপাসনাগৃহে ছিল
ঈশ্বরের মহিমান্বিত সিংহাসন|
তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান|
13 প্রভু আপনিই ইস্রায়েলের আশা|
প্রভু আপনি জীবন্ত ঝর্ণার মত|
যদি একজন মানুষ আপনার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,
তার জীবন হয়ে যাবে খুবই ছোট|
যিরমিয়র তৃতীয় অভিযোগ
14 প্রভু, আমাকে সারিয়ে তুলুন
এবং আমি সত্যি সত্যিই সেরে উঠব|
আমায় রক্ষা করুন,
তাহলে আমি সত্যিই রক্ষা পাব|
প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি!
15 যিহূদার লোকরা আমাকে প্রশ্ন করেই চলেছে|
তারা বলছে, “যিরমিয়, প্রভুর বার্তার কি হল?
আমাদের দেখতে হবে ঐ বার্তা সত্যি হবে|”
16 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে দৌড়ে পালাই নি
বরং আমি আপনাকেই অনুসরণ করে চলেছি|
আমি আপনারই ইচ্ছে মতো মেষপালক হয়েছি|
আমি কখনোই চাইনি ভয়ঙ্কর দিন আসুক|
প্রভু আমি যা বলেছিলাম, তা সব আপনি জানেন|
যা ঘটেছে তার সব কিছুই আপনি নিজের চোখে দেখেছেন|
17 প্রভু আমাকে ধ্বংস করবেন না|
আমি অশান্তির সময়গুলোতে আপনার ওপরে নির্ভর করে থাকি|
18 লোকরা আমাকে নির্যাতন করছে|
ওদের লজ্জিত করুন|
কিন্তু আমাকে নিরাশ করবেন না|
ঐ মানুষদের ভয় পেতে দিন|
কিন্তু আমাকে ভীত করে তুলবেন না|
প্রলয়ের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমার শত্রুদের জীবনে আসুক|
তাদের চূর্ণ করুন| বারবার তাদের চূর্ণ করুন|
বিশ্রামের দিনকে পবিত্র রাখা হোক্
19 প্রভু, আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, যাও লোকদের ফটকের কাছে গিয়ে দাঁড়াও যেটার মধ্যে দিয়ে যিহূদার রাজা ভেতরে ঢোকে এবং বাইরে যায়| লোকদের আমার বার্তা শোনাও এবং তারপর জেরুশালেমের প্রত্যেকটি ফটকে গিয়ে একই কাজ করো|”
20 ঐ লোকদের বলো: “প্রভুর বার্তা শোন| শোন যিহূদার রাজা এবং যিহূদার সাধারণ মানুষ| এই ফটক দিয়ে জেরুশালেমে যাতায়াত করা প্রত্যেকটি মানুষ আমার কথা শোন! 21 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ‘সতর্ক থেকো, তোমরা বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| 22 বিশ্রামের দিনে ঘরের মালপত্রও নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না| সেদিন কাজেও যেতে পারবে না| বিশ্রামের দিন তোমরা পবিত্র দিন হিসেবে যাপন করবে| আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও এই আদেশ দিয়েছিলাম| 23 কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি| তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে অমান্য করেছিল| তোমাদের পূর্বপুরুষরা ছিল একগুঁয়ে ও জেদী| আমি তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি| তারা আমার কোন কথা শোনেনি| 24 কিন্তু তোমরা মন দিয়ে আমার কথা শোন| আমাকে মান্য করো| এই হল প্রভুর বার্তা: বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র বয়ে এনো না| বিশ্রামের দিন কাজ করা বন্ধ রেখো এবং ঐ দিনটি পবিত্র ভাবে কাটাও|
25 “ ‘যদি তোমরা আমার আদেশ মান্য করো, তাহলে দায়ুদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজগণ জেরুশালেমের ফটক দিয়ে প্রবেশ করবে| রথে চড়ে, ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন রাজারা আসবে| যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতারা হবে সেই রাজা এবং জেরুশালেম চিরকালের জন্য বসবাসকারী লোক পাবে| 26 যিহূদা শহর থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে| জেরুশালেমের আশপাশের ছোট্ট গ্রাম থেকে, বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে, পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশ থেকে এবং নেগেভ থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে| ওরা সবাই সঙ্গে নিয়ে আসবে ধুপধূনা, হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য| তারা সেই সমস্ত উপহার এবং নৈবেদ্য আনবে প্রভুর উপাসনা গৃহের জন্য|
27 “ ‘কিন্তু যদি তোমরা আমাকে অমান্য করো এবং আমার কথা না শোন তাহলে অমঙ্গল ঘনিয়ে আসবে| যদি তোমরা বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে বোঝা বহন করো এবং তাকে অপবিত্র করো, তাহলে আমি জেরুশালেমের ফটকগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেব, সেই আগুন যা নেভানো যায় না| সেই আগুন জেরুশালেমের ফটক থেকে শুরু করে সব কিছু পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে|’ ”