পাড়র পেটো হজরত ইছার তালিম (৫:১-৭:২৯)
5
কুন কুন মানুষ নেক-কপালি
1 বউত মানুষ আইছইন দেখিয়া ইছা গিয়া এক পাড়র উপরে উঠিলা। উঠিয়া বওয়ার বাদে তান সাগরিদ অকল কান্দাত আইলা। 2 সাগরিদ অকলরে দেখিয়া তাইন অউ তালিম দিলা, কইলা,
3 “নেক-কপালি অউ মানুষউ, যারা দিল থাকি নিজরে গরিব মনো করে,
বেহেস্তি বাদশাই তো তারাউ পাইবা।
4 তারাউ কপালি, যারার মনো অখন দুখ আছে,
তারাউ তো সুখ পাইবা।
5 তারাউ কপালি, যারার চাল-চলন নরম,
ই দুনিয়া তো তারারউ অইবো।
6 তারাউ কপালি, যেরা দিলে-জানে পাক-পরেজগারির লাগি কান্দে,
তারার অউ আশা পুরা অইবো।
7 তারাউ কপালি, যারা মানষরে দয়া করে,
তারাউ তো দয়া পাইবা।
8 তারাউ কপালি, যারার দিল খাটি,
কারন তারাউ আল্লার দিদার পাইবা।
9 তারাউ কপালি, যারা মানষরে শান্তিয়ে রাখার লাগি মেনত করে,
আল্লায় তারারে তান আপন আওলাদ কইয়া ডাকিবা।
10 তারাউ কপালি, যারা আল্লার হুকুম মাফিক চলাত গিয়া
জুলুম-মছিবত সইয্য করে,
বেহেস্তি বাদশাই তো তারাউ পাইবা।
11 আর তুমরাউ কপালি, যারারে আমার লাগি মানষে ঘিন্নায়, মানষে তুমরারে জুলুম করে আর নানান নমুনার মিছা বদনাম গায়। 12 ইলা অইলে মনো রাখিও, তুমরার আগে যে নবী অকল আইছলা, ইতা মানষে অউ নবীর উপরেও অলা জুলুম করতা। তে তুমরা খুশি-বাসি আর ফুর্তি করিও, কারন তুমরাও অউ নবী অকলর লাখান বেহেস্তো বউত বড় পুরুস্কার পাইবায়।
মুমিন অকল দুনিয়ার বাত্তি আর নুন
13 “তুমরা অইলায় দুনিয়ার নুন, অইলে নুনর গুন যুদি নষ্ট অইযায়, তে আর নুনতা করা যায় নি? ই নুন তো আর কুনু কামো লাগে না। মানষে ইতা বারে ফালাই দেইন আর ইতার উপরেদি আটইন।
14 “হুনো, তুমরা অইলায় দুনিয়ার বাত্তি। পাড়র উপরর কুনু টাউন তো লুকাইল রাখা যায় না। 15 আর কুনু মানষে লেম জালাইয়া টুকরির তলে থয় না, ইকটা লেম-দানির উপরেউ থয়, যাতে ঘরর হকলে ফর দেখইন। 16 অউ লাখান তুমরার ফরও মানষর ছামনে জলউক, যাতে তুমরার ভালা কাম দেখিয়া মানষে তুমরার বেহেস্তি বাফ, আল্লা পাকর তারিফ করইন।
শরিয়তর বেয়াপারে তালিম
17 “তুমরা ইখান মনো করিও না, আমি তৌরাত কিতাব আর নবী অকলর ছহিফা বাতিল করাত আইছি। আমি তো ইতা বাতিল করাত নায়, বরং পুরা করাত আইছি। 18 আমি হাছা কথা কইরাম, তৌরাত কিতাবর হকল কথা যতদিন না ফলিছে, অতো দিন ই কিতাবর একটা হরফ বা জের-জবরও বাতিল অইতো নায়। আছমান-জমিন ক্ষয় না অওয়া পর্যন্ত, ইখান বাতিল অইতো নায়। 19 তৌরাত কিতাবর কুনু হুরু-মুরু হুকুমও যুদি কেউ না মানে, বা ই হুকুম না মানার লাগি মানষরে পরামিশ দেয়, তে বেহেস্তি বাদশাইত তারেও হকল থাকি হুরু কওয়া অইবো। অইলে যে জনে ই হুকুম-আহকাম আমল করে আর মানষরেও হিকায়, বেহেস্তি বাদশাইত তারে বউত দাম দেওয়া অইবো। 20 আমি তুমরারে কইরাম, আলিম-উলামা আর ফরিশি অকলর আমল থাকিও, তুমরার আমল যুদি আরো ভালা না অয়, তে কুনুমন্তেউ বেহেস্তি বাদশাইত হামাইতায় পারতায় নায়।
রাগ-গুছার বেয়াপারে হুশিয়ারি
21 “তুমরা হুনছো, আগর আমলর মানষর গেছে কওয়া অইছে, ‘খুন করিও না, যেগিয়ে খুন করবো, হে ই খুনর দাড়ো পড়বো।’ 22 অইলে আমি তুমরারে কইরাম, যে মানষে তার ভাই-বিরাদরর লগে রাগ-গুছা করে, হে বিচারর দাড়ো পড়বো। হে যুদি তার ভাইরে কয়, ‘তুমি তো বেআখল’ তে আরো বড় বিচারর দাড়ো পড়বো। আর যে জনে তার ভাইরে কয়, ‘তুমি বেওকুফ,’ হে দোজখর আগুইনো জলবো।
23 “এরদায় কুরবানি খানাত গিয়া আল্লার নামে লিল্লা-ছদগা দিবার সময় যুদি তুমার মনো অইযায়, তুমার লগে তুমার কুনু ভাইর বিবাদ আছে, 24 তে তুমার লিল্লা-ছদগা অউ জাগাত থইয়া, আগে গিয়া তুমার ভাইর লগে মিট-মাট করো, বাদে গিয়া তুমার কুরবানি দেও।
25 “কেউ তুমার বিরুদ্ধে কুনু মামলা করলে আদালতো যাওয়ার আগেউ তার লগে জলদি মিট-মাট করিলিও। ইলা না করলে, হে তুমারে হাকিমর আতো দিবো, হাকিমে তুমারে পুলিশর হাওলা করবা, আর পুলিশে তুমারে জেলো হারাইবা। 26 হেশে তার ষোলআনা পাওনা আদায় না করা পর্যন্ত, তুমি কুনুমন্তেউ ছাড়া পাইতায় নায়। আমি তুমরারে আসল কথা কইলাম।
জিনা আর কছমর বেয়াপারে হুশিয়ারি
27 “তুমরা হুনছো, আগে বাতাইল অইছে, ‘জিনা করিও না।’ 28 অইলে আমি তুমরারে কইরাম, কুনু বেটায় যুদি কুনু বেটি মানষর বায় কু-নজরে চায়, তে হে অউ সময় মনে মনে তাইর লগে জিনা করলো।
29 “তুমার ডাইন চউখে যুদি তুমারে গুনার পথে টানে, তে ই চউখ তুলিয়া ফালাই দেও। আস্তা শরিল লইয়া দোজখো যাওয়া থাকি, একটা অংগ বিনাশ করিলাওয়া তুমার লাগি ভালা। 30 তুমার ডাইন আতে যুদি তুমারে গুনার পথে টানে, ই আত কাটিয়া ফালাই দেও। আস্তা শরিল লইয়া দোজখো যাওয়া থাকি, একটা অংগ বিনাশ করিলাওয়া তুমার লাগি ভালা।
31 “আরো কওয়া অইছে, ‘যে মানষে তার বউরে তালাক দেয়, হে বউরে তালাক নামা দেউক।’ 32 অইলে আমি তুমরারে কইরাম, যে মানষে জিনা ছাড়া অইন্য কুনু কারনে নিজর বউরে তালাক দেয়, হে তো তার বউরে জিনাকুর বানায়। আর তালাক পাওয়া বেটিরে যেগিয়ে বিয়া করে, হে-ও জিনাকুর বনে।
33 “তুমরা তো জানো, আগর জমানার মানষর গেছে বাতাইল অইছে, ‘মিছা কুনু কছম করিওনা, আর যেকুনু কছম করলে ইটা আল্লার নামে আদায় করিও।’ 34 অইলে আমি তুমরারে কইরাম, কুনুজাত কছম করিও না। বেহেস্তর নামে কছম করিও না, ইখান তো আল্লার আরশ। 35 দুনিয়ার নামে করিও না, ইখান তো আল্লার কদম মুবারক থওয়ার জাগা। জেরুজালেমর নামেও কছম করিও না, ইখান অইলো মহান বাদশা আল্লার টাউন। 36 তুমার নিজর মাথার নামে কছম করিও না, ই মাথার একছা চুলরে ধলা বা কালা করার খেমতা তো তুমার নাই। 37 তুমরার মাতর অয় খান অয়, আর না খান না অউক। হুনো, ইতার বারে আর যততাউ অয়, ইতা ইবলিছ থাকি অয়।
বদলা লওয়ার বেয়াপারে তালিম
38 “তুমরা তো হুনছো, আগে বাতাইল অইছে, যে পরিমানে খেতি অইছে, অউ পরিমানে সাজা দিও, ‘চউখর বদলা চউখ আর দাতর বদলা দাত।’ 39 অইলে আমি কইরাম, কেউ যুদি তুমরার লগে খারাপ বেবহার করে, তে তুমরা এর বদলা লইও না, বরং কুনু মানষে তুমার ডাইন গালো চড় মারলে, তারে বাউ গালও পাতিয়া দিলাইও। 40 কেউ যুদি মামলা-মকদ্দমা করিয়া তুমার কোর্তা নিতোগি চায়, তে তুমার চাদ্দরও দিলাইও। 41 কেউ যুদি তুমারে কয়, তার গাইট বইয়া লইয়া এক মাইল যাইতায়, তে তুমি তার লগে দুই মাইল যাইওগি। 42 কেউ তুমার গেছে কুন্তা খুজিলে তারে দিও। কেউ আওলাত চাইলে, তারে ফিরাই দিওনা।
দুশমনরে মহব্বত করো
43 “তুমরা জানো, আগে তো বাতাইল অইছিল, ‘তুমার আরি-ফরিরে মায়া করিও আর দুশমনরে ঘিন্নাইও।’ 44 অইলে আমি তুমরারে কইরাম, তুমরার দুশমনরেও মায়া করিও। যেরা তুমরারে জুলুম করে, তারার লাগি দোয়া করিও। 45 ইতা দেখিয়া মানষে বুজবা, তুমরা হাছাউ তুমরার বেহেস্তি বাফ আল্লা পাকর মায়ার আওলাদ বনিগেছো। তাইন তো ভালা-বুরা হকলর উপরে তান সুরুজ উঠাইন, দীনদার আর নাফরমান হকলর উপরেউ মেঘ-পানি দেইন। 46 যারা তুমরারে মহব্বত করে, তুমরা যুদি খালি তারারেউ মহব্বত করো, তে তুমরা কিতা পুরুস্কার পাইবায়? ঘুষখুর তশিলদার অকলেও ইলা করে না নি? 47 তুমরা যুদি খালি নিজর ভাইরে ছালাম দেও, তে অইন্য মানুষ থাকি বেশি আর কিতা কররায়? বিধর্মী অকলেও ইলা করইন না নি? 48 এরলাগি আমি কইরাম, তুমরার বেহেস্তি বাফ আল্লা পাক যেলা খাটি, তুমরাও অলা খাটি অও।