তোমরা ইহুদীরাও পাপী
2
1 যদি মনে কর যে তুমি ঐ লোকদের বিচার করতে পার, তাহলে ভুল করছ, কারণ তুমিও দোষী৷ তুমি অপরের বিচার কর; কিন্তু তুমিও সেই একইরকম মন্দ কাজ কর৷ কাজেই তুমি যখন অন্যের বিচার কর তখন নিজেকেই দোষী সাব্যস্ত কর৷
2 যাঁরা মন্দ কাজ করে ঈশ্বর তাদের বিচার করেন; আর তাঁর বিচার ন্যায়সম্মত৷
3 তুমি তাদের বিচার করে থাক; কিন্তু তুমি নিজেও তাদের মত সেই সব মন্দ কাজ কর৷ তাই এ কথা তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ যে ঈশ্বর তোমার বিচার করবেন৷ তুমি তাঁর বিচার এড়াতে পারবে না৷
4 ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়া করেছেন ও সহিষ্ণু হয়েছেন৷ ঈশ্বর অপেক্ষা করছেন যেন তোমার পরিবর্তন হয়; কিন্তু তুমি তাঁর দয়াকে তুচ্ছ জ্ঞান করছ৷ তুমি হয়তো বুঝতে পারছ না যে তোমাদের প্রতি ঈশ্বরের এত দয়ার উদ্দেশ্য হল যাতে তোমরা পাপ থেকে মন-ফিরাও৷
5 কিন্তু তুমি কঠিনমনা লোক ও অবাধ্য৷ তুমি পরিবর্তিত হতে চাও না, তাই তুমিই তোমার দণ্ডকে ঘোরতর করে তুলছ৷ ঈশ্বরের ক্রোধ প্রকাশের দিনে তুমি সেই দণ্ড পাবে, যে দিন লোকে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার দেখতে পাবে৷
6 ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে তার কার্য অনুসারে ফল দেবেন৷
7 যারা অবিরাম তাদের সতক্রিয়া দ্বারা মহিমা, সম্মান এবং অমরত্বের অন্বেষণ করে, ঈশ্বর তাদের অনন্ত জীবনের অধিকারী করবেন৷
8 কিন্তু যারা স্বার্থপর, সত্যের অবজ্ঞাকারী এবং মন্দ পথেই চলে, ঈশ্বর তাদের উপর তাঁর ক্রোধ ও শাস্তির প্রবাহ বইয়ে দেবেন৷
9 যারা মন্দ কাজ করে তাদের প্রত্যেকের জীবনে ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্লেশ ও পীড়া আসবে৷ প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের উপরে৷
10 কিন্তু যারা সত্কাজ করে তাদের তিনি মহিমা, সম্মান ও শান্তি দেবেন, প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের৷
11 ঈশ্বর সকল মানুষকে একইভাবে বিচার করেন৷
12 যারা বিধি-ব্যবস্থা জানে আর যারা তা কখনই শোনে নি, পাপ করলে তারা সকলে একই পর্যায়ে পড়ে৷ বিধি-ব্যবস্থা না জেনে যত লোক পাপ করেছে, তারা সকলেই বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বিনষ্ট হবে৷ একইভাবে যাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তবু পাপ করে, তাদের বিধি-ব্যবস্থা দ্বারাই বিচার হবে৷
13 বিধি-ব্যবস্থার কথা শুধু শুনলে ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় না বরং বিধি-ব্যবস্থা যা বলে তা সর্বদা পালন করলেই ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক হওয়া যায়৷
14 অইহুদীরা কোন বিধি-ব্যবস্থা পায় নি, অথচ তারা যখন স্বভাবতঃ বিধি-ব্যবস্থা অনুযায়ী কাজ করে তখন তারা নিজেরাই নিজেদের বিধি-ব্যবস্থা৷ যদিও তাদের অধিকারে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই তবুও এটাই সত্য৷
15 তারা দেখায় যে, বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ, তা তারা তাদের হৃদয় দিয়েই জানে৷ তাদের বিবেকও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়৷ অনেক সময় তাদের চিন্তাধারাই ব্যক্ত করে যে তারা অন্যায় কাজ করছে আর তাতে তারা দোষী হয়৷ কোন কোন সময় তাদের চিন্তাধারা ব্যক্ত করে যে তারা ঠিকই করছে, আর তাই তারা দোষী হয় না৷
16 এসব তখনই ঘটবে যখন ঈশ্বর, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে মানুষের সকল গুপ্ত বিষয়ের বিচার করবেন৷ যে সুসমাচার আমি লোকদের কাছে প্রচার করি তা এই কথাই বলছে৷
ইহুদীরা এবং বিধি-ব্যবস্থা
17 তোমার অবস্থা কেমন? তুমি নিজেকে ইহুদী বলে পরিচয় দাও এবং বিধি-ব্যবস্থার উপর নির্ভর কর ও গর্ব কর যে তুমি ঈশ্বরের কাছাকাছি রয়েছ৷
18 তুমি জান যে ঈশ্বর তোমার কাছ থেকে কোন্ কাজ আশা করেন; আর কোন্টা গুরুত্বপূর্ণ তাও তুমি জান, কারণ তুমি বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষা করেছ৷
19 যারা ঠিক পথ চেনে না তুমি মনে কর এমন লোকদের তুমি একজন পথ প্রদর্শক৷ তুমি মনে কর যারা অন্ধকারে আছে তুমি তাদের কাছে জ্যোতিস্বরূপ৷
20 তুমি মনে কর যে, যাদের মৌলিক শিক্ষার প্রয়োজন তুমি তাদের শিক্ষক হতে পার৷ তোমার কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তাই তুমি মনে কর যে তুমি সবই জান ও সব সত্য তোমার কাছেই রয়েছে৷
21 তুমি অপরকে শিক্ষা দিয়ে থাক; কিন্তু তুমি কি নিজেকেও শিক্ষা দাও? চুরি করো না বলে তুমি অপরকে শিক্ষা দাও৷ কিন্তু তুমি নিজে চুরি কর৷
22 তুমি বল লোকে যেন যৌন পাপে লিপ্ত না হয়; কিন্তু তুমি নিজে সেই পাপে পাপী৷ তুমি প্রতিমা ঘৃণা কর কিন্তু মন্দির থেকে চুরি কর৷
23 তুমি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব কর আবার সেই একই বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করে ঈশ্বরেরই অবমাননা কর৷
24 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে: “ইহুদীরা, তোমাদের জন্যই অইহুদীরা ঈশ্বরের নিন্দা করে৷”
25 সুন্নতের মূল্য আছে যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থা মান; কিন্তু যদি বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন কর তাহলে তা সুন্নত না হওয়ার সমান৷
26 অইহুদীরা সুন্নত করায় না; কিন্তু সুন্নত ছাড়াই যদি তারা বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ মেনে চলে তাহলে কি তারা সুন্নতের মতই হবে না?
27 ইহুদীরা, তোমাদের লিখিত বিধি-ব্যবস্থা ও সুন্নত প্রথা আছে; কিন্তু তোমরা বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন কর৷ তাই যাদের দৈহিকভাবে সুন্নত হয়নি অথচ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলে, তারা দেখিয়ে দেবে যে তোমরা ইহুদীরা দোষী৷
28 বাহ্যিকভাবে ইহুদী হলেই প্রকৃত ইহুদী হওয়া যায় না, এবং পূর্ণ অর্থে বাহ্যিক সুন্নত প্রকৃত সুন্নত নয়৷
29 যে অন্তরে ইহুদী সেই প্রকৃত ইহুদী৷ প্রকৃত সুন্নত সম্পন্ন হয় অন্তরে; বিধি-ব্যবস্থায় লিখিত অক্ষরের মাধ্যমে তা হয় না কিন্তু অন্তরে আত্মা দ্বারা সাধিত হয়৷ আত্মার দ্বারা যে ব্যক্তির হৃদয়ের সুন্নত হয় সে মানুষের প্রশংসা নয়, ঈশ্বরের প্রশংসা পায়৷